ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার ও সাবেক অতিরিক্ত আইজি খন্দকার গোলাম ফারুক এবং তার স্ত্রী শারমিন আক্তার খানের বিরুদ্ধে ৩ হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
আদালতের আদেশ
বুধবার (১ জানুয়ারি), ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জাকির হোসেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের ভিত্তিতে এ আদেশ দেন। দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত এ সংক্রান্ত আবেদন উপস্থাপন করেন।
অভিযোগের বিবরণ
দুদকের আবেদনে বলা হয়, খন্দকার গোলাম ফারুক ও তার স্ত্রী সরকারি ক্ষমতার অপব্যবহার করে দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। তারা দেশে এবং বিদেশে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ। এ অর্থের একটি বড় অংশ বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
পালানোর চেষ্টা ও অনুসন্ধানের জটিলতা
গোপন সূত্রের বরাত দিয়ে দুদক আরও জানায়, অভিযুক্তরা বিদেশে পালানোর চেষ্টা করছেন। তাদের দেশত্যাগ করতে পারলে তদন্তে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। এর ফলে অভিযোগের যথাযথ অনুসন্ধান ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই তদন্ত সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে তাদের বিদেশ গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।
দুর্নীতির প্রতিক্রিয়া
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অভিযোগ দেশের প্রশাসনিক ব্যবস্থায় সুশাসনের ঘাটতির একটি গুরুতর উদাহরণ। উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেবল নৈতিকতার অভাবই নয়, বরং দেশের আর্থিক ব্যবস্থার জন্য মারাত্মক হুমকিস্বরূপ।
পরবর্তী পদক্ষেপ
দুদক ইতিমধ্যে অভিযুক্তদের সম্পদের উৎস এবং অর্থপাচারের চ্যানেল নির্ধারণে কাজ করছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এ ঘটনায় সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে।
উপসংহার
গোলাম ফারুক এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রশাসনিক দুর্নীতির ভয়াবহতার এক চিত্র তুলে ধরেছে। এটি আরও একবার প্রমাণ করে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত না করা গেলে প্রশাসনের উচ্চপর্যায়ে দুর্নীতি থামানো কঠিন। অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে দেশের সুশাসন প্রতিষ্ঠায় নজির স্থাপন করা জরুরি।