যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কামরুল হাসান খন্দকারের নিয়োগ নবায়নের আবেদন ঘিরে ভয়াবহ অনৈতিকতা ও জালিয়াতি উদ্ঘাটিত হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলামের স্বাক্ষর জাল করে একটি সুপারিশপত্র আইডিআরএ-তে জমা দেওয়া হয়েছে।
সুপারিশপত্রে জালিয়াতির প্রমাণ
ডাক, টেলিযোগাযোগ এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য অফিসার মুহম্মদ জসীম উদ্দিন জানিয়েছেন, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম সবসময় বাংলায় স্বাক্ষর করেন। কিন্তু এই জাল সুপারিশপত্রটি ইংরেজিতে সই করা, যা পরিষ্কারভাবেই জালিয়াতির অংশ।
পূর্বের বিতর্কিত নিয়োগ প্রক্রিয়া
কামরুল হাসান খন্দকার ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর তার নিয়োগ নবায়নের জন্য আবেদন করেন। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে ভারতের উত্তর প্রদেশের একটি ডিমড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০২ সালে এমবিএ পাসের তথ্য উল্লেখ করা হয়। তবে সেই শিক্ষাসনদ ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় ২০২৩ সালের ১৯ মার্চ আইডিআরএ তার নিয়োগ নবায়নের আবেদন নামঞ্জুর করে।
এরপর গত ২৪ ডিসেম্বর নতুন আবেদন জমা দিয়ে তিনি উপদেষ্টার সুপারিশপত্র জমা দেন, যা পরবর্তীতে জাল প্রমাণিত হয়।
উপদেষ্টার সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নিজে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিবকে চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছেন যে, কেউ তার নাম বা পরিচয় ব্যবহার করে কোনো তদবির করলে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেন যে, তার স্বাক্ষর নকল করা হচ্ছে এবং এটি তার সুনাম বিনষ্ট করছে।
পরিস্থিতির প্রভাব
এ ঘটনা প্রমাণ করে দেশে প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা ও সুশাসনের অভাব। এই জালিয়াতি কেবল আইনি শাস্তি দাবি করে না, বরং ভবিষ্যতে এই ধরনের অপরাধ রোধে আইডিআরএ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর আরও কঠোর নজরদারি প্রয়োজন।
উপসংহার
যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সে সিইও পদে নিয়োগ ঘিরে সুপারিশপত্র জালিয়াতির ঘটনা দেশের কর্পোরেট খাতের জন্য একটি গভীর শিক্ষা। এটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং সংস্থাগুলোকে আরও সচেতন হতে বাধ্য করবে। সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।